বরগুনার তালতলী উপজেলার নিশানবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘন, ভোটারদের মারধর, প্রতিপক্ষকে হুমকি-ধামকি, দেশীয় অস্ত্রের মহড়া, প্রচার-প্রচারণায় বাধা সৃষ্টি ও প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থীর জীবননাশের হুমকিসহ নানা অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (২ জুন) সন্ধ্যায় বরগুনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসব অভিযোগ করেন ওই ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. দুলাল ফরাজী।
নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. দুলাল ফরাজী সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী কামরুজ্জামান বাচ্চু নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পরপরই এলাকায় ত্রাসের রাজ্য সৃষ্টি করেছে। দূরদূরান্ত থেকে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী বাহিনী এনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীসহ সমর্থক কর্মী ও সাধারণ ভোটারদের জিম্মি করে রেখেছে।
আওয়ামী লীগ সমর্থিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. কামরুজ্জামান বাচ্চু এবং তার সমর্থকরা প্রতিনিয়ত আমার ভোটারদের মারধর, বাড়িঘরে হামলা, হুমকি-ধামকি, বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে নির্যাতন, ভয়-ভীতি প্রদর্শনসহ প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া দিয়ে যাচ্ছে। এমনকি আমাকেও নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় মাঠে নামতে দিচ্ছে না এবং মাঠে নামলে প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হচ্ছে। আমাকে বর্তমানে নিজ বাসায় এক প্রকার অবরুদ্ধ হয়ে নির্বাচন করতে হচ্ছে। রাতের আঁধারে ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে আমার নির্বাচনী ব্যানার, পোস্টার। নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
তিনি আরও বলেন, নৌকা প্রতীক প্রার্থীর ওপর সাধারণ ভোটারদের সমর্থন না থাকার কারণে জোরপূর্বক সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছেন প্রার্থী কামরুজ্জামান বাচ্চু। তিনি তালতলী এবং বরগুনা থেকে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে সাধারণ ভোটারদের মারধরসহ এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছেন। প্রার্থী কামরুজ্জামান বাচ্চুর আত্মীয় বশির, সুমন, বিশাল ছাড়াও অসংখ্য সন্ত্রাসী ইউনিয়নটিতে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে।
তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, আমার স্ত্রী মাসুদা আক্তার ইউনিয়নের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় অংশগ্রহণ করতে গেলে নৌকা প্রতীকের সর্মথকরা জনৈক জালালের ঘরে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। আমার স্ত্রীর ওপর হামলাও করা হয়। আমার প্রচার মাইক ভাঙচুর করা হয়। নিশানবাড়ীয়া ইউনিয়নের তাতিপাড়া গ্রামের নূরু মিয়া, মৌরভী গ্রামের সুমন এবং চামোপাড়া গ্রামের খলিলকে তুলে নিয়ে মারধর করে ছেড়ে দেয় কামরুজ্জামান বাচ্চুর সর্মথকরা। সোমবার রাতে আমি অফিসিয়াল কাজে বরগুনা শহরের কলেজ ব্রাঞ্চ রোডে আমার নিজ বাসায় অবস্থানকালে বাহির থেকে অবরুদ্ধ করে কামরুজ্জামানের একদল ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী। এ সময় আমাকে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার জন্য নানা ধরনের চাপ সৃষ্টি করে। নির্বাচন থেকে সরে না দাঁড়ালে আমাকে জীবন জীবননাশের হুমকি দেয়া হয়। বর্তমানে আমি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
তিনি জানান, এ ব্যাপারে আমি নির্বাচন কমিশন, রিটার্নিং অফিসার, তালতলী থানা এবং উপজেলা প্রশাসনকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর এমন আচরণের বিরুদ্ধে অবহিত করেছি কিন্তু তাতেও কোনো প্রকার প্রতিকার পাচ্ছি না। আমি দাবি করছি নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নে যেন একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন বাস্তবায়ন করা হয়। যাতে সাধারণ ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।