বরগুনার তালতলীতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অনুমতি ও টেন্ডার না দিয়েই দক্ষিন ঝাড়াখালী ছালেহিয়া দাখিল মাদ্রাসার ভবন বিক্রি করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপারিনটেনডেন্ট মাওলানা আব্দুল জব্বার ও মাদ্রাসার সভাপতি সাবেক সুপারিনটেনডেন্টের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। সেই সঙ্গে ভবন বিক্রি করার টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে আত্মসাৎ করারও অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে।
মাদ্রাসার ইবতেদায়ী কারী নুরুল আমিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর এবিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা তথ্য কর্মকর্তা সঙ্গীতা রাণীর কাছে তদন্তভার অর্পণ করা হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার দক্ষিণ ঝাড়াখালী সালেহিয়া মাদ্রাসা একটি সরকারী নতুন ভবন বরাদ্দ পায়। নিয়ম অনুযায়ী নতুন ভবন নির্মাণের জন্য পূর্বের ভবনটি ভেঙে ফেলতে হবে। ওই ভবন ভাঙার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অনুমতি ও টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করতে হবে। কিন্তু মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার ও সভাপতি কোন রকমের নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই নিজেরা গোপনে ভেঙে বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করেন।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পূর্বের ভবনটি দৈর্ঘ্য ৮৫ ফুট, প্রস্থ প্রায় ১৮ ফুট টিনশেড একতলা বিল্ডিং, যার বর্তমান আনুমানিক মূল্য প্রায় ২০ লক্ষ টাকা। ওই ভবনটি কোন টেন্ডার না দিয়েই বিক্রি করেন মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার মাওলানা আব্দুল জব্বার ও সভাপতি মাওলানা আব্দুল মতিন। এক্ষেত্রে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কিংবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়কে অবহিত পর্যন্ত করা হয়নি।
অভিযোগকারী শিক্ষক কারী নুরুল আমিন বলেন, টেন্ডার ছাড়াই করোনাকালীন বন্ধের সময় মাদ্রাসার সাবেক সুপার, বর্তমান সভাপতি ও মাদ্রাসার বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সুপার গোপনে মাদ্রাসার মালামাল স্থানীয়দের কাছে বিক্রি করে দিয়ে মোটা অংকের টাকা আত্মসাত করেছে।
এবিষয়ে মাদ্রাসার কয়েকজন শিক্ষকের সাথে আলাপ করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে, এছাড়াও তিনি গোপনে ভুয়া রেজুলেশন বানিয়ে শিক্ষকদের স্বাক্ষর জাল করে প্রতারণা করেন বলে শিক্ষকরা অভিযোগ করেন।
মাদ্রাসা সংলগ্ন বাড়ির মো. মোস্তফা ও মো. মোর্তজা বলেন, পূর্বে একটি ৮৫ ফুট দৈর্ঘ একতলা বিল্ডিং ছিল। ভারপ্রাপ্ত সুপার আ. জব্বার ও সভাপতি, সাবেক সুপার মাওলানা আবদুল মতিন এটা ভেঙ্গে প্রায় ৩০ হাজার ইট, টিন, কাঠ ও দরজা-জানালা বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
এ বিষয়ে মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার আব্দুল জব্বার বলেন, আমি ভবন ভাঙিনি। রাতের আঁধারে ঠিকাদার ভবন ভেঙে ফেলেছেন।
অপরদিকে মাদ্রাসার সাবেক সুপার ও বর্তমান সভাপতি বলেন, কমিটির মাধ্যমে রেজুলেশন করে ভবনটি ভেঙে ফেলা হয়েছে।
তালতলী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুল কবির মো. কামরুল হাসান বলেন, টেন্ডার ছাড়া মালামাল বিক্রি করা যাবে না।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কাওছার হোসেন বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তথ্য কর্মকর্তাকে তদন্তভার দেয়া হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।