বরগুনা-২ আসনে (পাথরঘাটা-বামনা-বেতাগী উপজেলায়) এমপির বরাদ্দের ৩২৩টি প্রকল্পের গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের নামে দুই কোটিরও বেশি টাকা লোপাট হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বরগুনা-২ আসনে সাংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমন রাস্তা, মসজিদ, নলকূপ ও পাবলিক টয়লেটসহ অসংখ্য প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ২ কোটি ২ লাখ ৫১ হাজার ৮০৫ টাকা বরাদ্দ দেন। অদৃশ্য এসব প্রকল্পগুলোতে অধিকাংশ জায়গায় কোনো কাজ হয়নি। অথচ প্রকল্পের কাজ শেষ দেখিয়ে গত ২০২০-২১ এর জুনে বরাদ্দের টাকাও উত্তোলন করা হয়েছে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বেতাগী পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা বৃদ্ধা লিনা বেগমের (৫৮) বাড়ি নলকূপ স্থাপনের জন্য ৫৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেন এমপি। অথচ তার বাড়িতে কোনো নলকূপ স্থাপন করা হয়নি।
ভুক্তভোগী লিনা বেগম বলেন, একবার শুনেছিলাম আমাকে একটি নলকূপ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমার বাড়িতে কোনো নলকূপ বসানো হয়নি। আমি এখনও মানুষের বাড়ি থেকে পানি এনে খাওয়াসহ রান্না-বান্না করি।
অনুসন্ধানে আরও দেখা গেছে, প্রথম পর্যায়ে পাথরঘাটার ২নম্বর ওয়ার্ডের সিডর পয়েন্টের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির জন্য গ্রিল নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে দেড় লাখ টাকা। তবে বাস্তবে এ কাজের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি সেখানে।
কাকচিড়ার জালিয়াঘাটা হাওলাদার বাড়ি মসজিদের ঘাট নির্মাণে ১ লাখ, তানভির আকনের বাড়ির রাস্তা নির্মাণে ৫০ হাজার, দক্ষিণ কুপধন খবির চেয়ারম্যান বাড়ি থেকে হেমায়েতের বাড়ি পর্যন্ত পাকা রাস্তা মেরামতে ১ লাখ ২০ হাজার এবং বেতাগীর মন্নানের হাটে পাবলিক টয়লেটের নামে ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন করলেও কোন কাজই হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্ট এক কর্মকতা বলেন, এমপির বরাদ্দকৃত প্রকল্পের কাজের দেখভাল এমপি নিজেই করেন। ৩২৩টি প্রকল্পের মধ্যে হাতে গোনা যে কয়েকটি কাজ দৃশ্যমান হয়েছে তাও নামে মাত্র। অদ্যৃশ প্রকল্পের সংখ্যাই বেশি।
এ বিষয়ে বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমন জানান, আমার জানামতে কোনো কাজ বাকি নেই। আর বরাদ্দের সব টাকার কাজই করানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান জানান, তদন্ত করে প্রকল্প লুটের সত্যতা মিললে বরাদ্দের টাকা উদ্ধারে চেষ্টা করা হবে।