আদালতের প্রতি আইনজীবীদের বিনম্র শ্রদ্ধা এবং আইনজীবীদের প্রতি আদালতের মর্যাদা….. বিচার বিভাগের জন্য অপরিহার্য।….
কিন্তু ইদানীং নিম্ন আদালতের বিচারকদের আচরণে মনে হয়, বিচার প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট তাদের প্রথমটি শিখিয়েছে, দ্বিতীয়টি শেখায়নি। ঢাকার আদালতে একজন আইনজীবীর রিমান্ড মঞ্জুর করে নিম্ন আদালতের বিচারকরা সেই শিক্ষারই প্রতিফলন দেখালেন। দাম্ভিক আচরণ না করেও যে ন্যায়বিচার করা যায়, সেটা তারা জানেই না!!
অভিজ্ঞতায় দেখেছি, একমাত্র ভালো এবং ভদ্র পরিবার থেকে আসা কিছু বিচারক ছাড়া অধিকাংশ বিচারকরা আদালতের এজলাসে সম্রাট শাহজাহানের মতন আচরণ করেন। এতে বিচারপ্রার্থী এবং আইনজীবীরা অসন্মানিতবোধ করেন, নিজেদের অনিরাপদ ভাবেন। ন্যায়বিচার পাবার পাশাপাশি বিচার চাইতে এসে বিচার বিভাগের “ভদ্র আচরণ” প্রত্যেক নাগরিকদের যৌক্তিক প্রত্যাশা। শুধু আইন জানলেই হবেনা, বিচারপ্রার্থী এবং আইনজীবীদের প্রতি মানবিক এবং ভদ্র আচরণ করা একজন সরকারি বেতনভোগীর ন্যায়ত এবং আইনত বাধ্যবাধকতা।….
শুধু এই কারনেই বিচার বিভাগের উচিৎ, নতুন একজন কর্মকর্তা নিয়োগ দেবার পরে “আচরণ” নিয়ে কার্যকর প্রশিক্ষণ প্রদান। আধুনিক যুগের কোন রাস্ট্রের কোন নাগরিক সম্রাট শাহজাহানের দরবারে বিচার চাইতে যেতে চাননা। তারা তাদের ট্যাক্সের পয়সায় নিয়োগপ্রাপ্ত দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের নিকট থেকে ভদ্র এবং বিনীত ব্যাবহার প্রত্যাশা করেন।
ঢাকার আদালতে তুচ্ছ ঘটনার মামলায় একজন “ভিক্টিম” আইনজীবীকে রিমান্ড দিয়ে নিম্ন আদালতের বিচারকরা একটা মেসেজ দিলেন। তাদের ক্ষমতার কাছে উকিল-টুকিল কিছুই না।….. তাদের মেসেজটি আমরা গ্রহণ করলাম কিন্তু জাতি দেখল, বিচার বিভাগ আইনজীবীকেও তুচ্ছ কারণে রিমান্ডে দেয়। যারা বলেন, বার এবং বেঞ্চ একই পাখির দুটি ডানা, তারা মুলত মিথ্যা বলেন।!!
বিচার প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট যখন তার কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেন তখন আইনজীবীদের নিয়ে তারা কী প্রশিক্ষণ দেন? আমার জানতে ইচ্ছে হয়!!
হাসান তারিক, আইনজীবী, সুপ্রিম কোর্ট