দেশের সর্বদক্ষিণের উপকূলীয় জেলা বরগুনা। রমজানের শেষ দু’দিনে জেলা শহরসহ বরগুনার ৬টি উপজেলাতেই জমে উঠেছে ঈদ বাজার। শুধু শহর অঞ্চলেই নয়, জেলার গ্রাম-গঞ্জের বাজারেও ব্যাস্ত বিক্রেতারা। ফুটপাত থেকে শুরু করে বড়-ছোট বিপনী বিতানগুলোতে চলছে বেচা-কেনার ধুম।
সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বরগুনা শহরের আল মিজান টাওয়ার শপিং মল, সদরঘাট মসজিদ মার্কেট, পৌরসভার সুপার মার্কেট, বঙ্গবন্ধু সড়কের গার্মেন্টস মার্কেট, কাপড় মার্কেট, জুতা মার্কেট, বাজার সড়কের কাপড় মার্কেট, মনোহরী মার্কেটসহ জুয়েলার্স মার্কেটে চলছে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভীড়।
প্রতিটি বিপনী বিতান রাতে আলোকিত করা হচ্ছে নানা রংয়ের বৈদ্যুতিক আলোকসজ্জায়। ব্যাবসায়ীদের মধ্য চলছে প্রতিযোগিতা। কোথাও কোথাও ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে ক্রয়ের উপর ডিসকাউন্টের পাশাপাশি রাখা হয়েছে লাকি কুপনের ব্যবস্থা।
বরগুনার বিভিন্ন ঈদ বাজার ঘুরে দেখা যায়, তীব্র গরম উপেক্ষা করে বিপণিবিতানগুলোতে সকাল থেকেই ভীড় করছেন বিভিন্ন বয়সী ক্রেতারা। নিজের ও পরিবারের জন্য পছন্দ অনুযায়ী কিনছেন পোশাক, জুতা ও প্রসাধনী। বিক্রেতারা জানান, এবার ঈদ বাজারে পুরুষদের তুলনায় নারী ক্রেতাদের ভীড় বেশি।
এদিকে বরগুনায় চলতি মৌসুমে কৃষির ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকদের মধ্যেও ঈদের আনন্দ বইছে। বিশেষ করে কৃষি বিভাগের প্রাথমিক তথ্য মতে এখন পর্যন্ত ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকার তরমুজ বিক্রি করেছে বরগুনার তরমুজ চাষীরা। দামও পেয়েছে সন্তোষ জনক। এখনো মাঠে বিক্রির অপেক্ষায় রয়েছে ১০-১২ কোটি টাকার তরমুজ। যা ঈদের পরে বিক্রির চুক্তি করেছে কৃষকরা। এছাড়াও সূর্যমুখীর ফলনও ভালো হওয়ায় কৃষকরা সঠিক মূল্য পাচ্ছেন। মুগ ডালের ফলনও ভালো হয়েছে। সবমিলিয়ে বরগুনার কৃষক পরিবার এবছর ঈদ করবে খুবই আনন্দ উৎসাহের মধ্যে এমনই ধারনা সংশ্লিষ্টদের।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বরগুনার সহকারী পরিচালক বিপুল বিশ্বাস বলেন, জনস্বার্থে নিয়মিত বাজার তদারকিমূলক অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি থেকে বিরত থাকার জন্য বিক্রেতাদের অনুরোধ করা হয়েছে। কোথাও অযৌক্তিক মূল্য রাখলে সেখানে জরিমানা আরোপ করা হচ্ছে। বাজারে আসা সকলকে মাস্ক পরিধান করা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য বলা হচ্ছে।
বরগুনার পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর মল্লিক জানান, বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত মানুষজন ঈদ করতে আসায় স্থানীয় দোকানগুলোতে ভীড় বেড়েছে। তবে গভীর রাত পর্যন্ত কেনাকাটা করে মানুষ যাতে নিরাপদে বাড়ী ফিরতে পারে সেজন্য পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সিসি ক্যামেরাসহ নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।