বিয়ের দাবিতে জামালপুর থেকে বরগুনায় আসা সেই তরুণী এবার আত্মহত্যা করারল হুমকি দিয়েছেন। একই সাথে তিনি ২৪ ঘন্টার মধ্যে তার প্রেমিককে হাজির করার আল্টিমেটাম দেন।
রবিবার (১ মে) দুপুরে প্রেমিক মাহমুদুল হাসানের মামা আবদুস সোবাহান গাজী ভাগিনার বাড়ির সামনে অনশণে বসা ওই তরুণীর খোঁজ-খবর নিতে আসেন। এসময় স্থানীয়রা সোবাহান গাজীকে অবরুদ্ধ করে রাখেন।
এর আগে গত বৃহষ্পতিবার সকালে জামালপুরের ওই তরুণি ঢাকার উত্তরা থেকে লঞ্চে বরগুনায় এসে বেতাগী উপজেলার চান্দখালী বাজার সংলগ্ন ঢাকার একটি বেসরকারি ভার্সিটি পড়ুয়া ছাত্রের বাসার সামনে অবস্থান নেন।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ সোনা মোল্লা জানন, বৃহষ্পতিবার বিকেলে তরুণি আসার পর বাসা ছেড়ে পরিবারসহ আত্মগোপনে আছেন তার প্রেমিক মাহমুদুল হাসান।
তরুণী জানান, জামালপুর জেলার সরিষাবাড়িতে তার গ্রামের বাড়ি। ঢাকার উত্তরায় থেকে সেখানের একটি ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করেন। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজিতে সিভিল প্রকৌশল বিভাগে অধ্যায়ন করা প্রেমিক মাহমুদুল হাসানও উত্তরায় থেকে পড়াশোনা করতেন। সেখানেই দুজনের পরিচয় থেকে প্রেম।
প্রেমিকার অভিযোগ, তিন বছর প্রেমের পর সম্প্রতি বিয়ের কথা বললে নানা অযুহাতে তাকে এড়িয়ে চলতে শুরু করেন মাহমুদুল। রোজার শুরুতে মাহমুদুল গ্রামের বাড়ি বরগুনায় চলে আসেন। বাড়িতে এসে প্রেমিক মাহমুদুল যোগাযোগ কমিয়ে দিয়ে তরুণীকে এড়িয়ে চলতে শুরু করেন।
এরপরই ওই তরুণী বৃহষ্পতিবার বরগুনায় এসে চান্দখালি বাজার সংলগ্ন মাহমুদুলের বাসার সামনে অবস্থান নেন। কিন্ত তিনি আসার পরপরই মাহমুদুল ও তার পরিবার বাসায় তালা দিয়ে গা ঢাকা দেয়।
রবিবার দুপুরে ওই তরুণী জানান, প্রেমিক মাহমুদুলের বাসা তালাবদ্ধ থাকায় তিনি বাসার সামনে বসে দিন-রাত পাড় করছেন। কিন্ত গত তিনদিনেও মাহমুদুল বা তার পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাননি। ফলে বাধ্য হয়ে ২৪ ঘন্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন এবং নির্ধারিত সময়ে তার দাবি মেনে না নেয়া হলে ওই বাসার সামনে তিনি আত্মহত্যা করবেন।
তরুণী বলেন, আমি এখানে মানবেতর দিনযাপন করছি এবং মাহমুদুলের ফিরে আসার অপেক্ষায় আছি। ওর পরিবার যদি সাড়া না দেয় তবে আমি এখানেই আত্মহত্যা করব। আমার ফেরার কোনো পথ খোলা নেই। স্থানীয় প্রশাসন ও নারী অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলোর কাছে আমি সাহায্য চাই।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হারুণ অর রশিদ সোনা মোল্লা বলেন, ওই তরুণির নিরাপত্তা দিয়ে দেখভাল করছি। তিনদিন ধরে মাহমুদুলের পরিবারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি। বিষয়টি সমাধান দরকার এবং আমরা সেই চেষ্টা করছি।
রবিবার দুপুরে মাহমুদুল হাসানের তালাবদ্ধ বাসায় ওই তরুনীর সঙ্গে কথা বলতে আসেন মাহমুদুল হাসানের মামা আবদুস সোবাহান গাজি। বর্তমানে তাকে অবরুদ্ধ রেখেছেন স্থানীয়রা।
সোবাহান গাজী বলেন, আমি মানবিক কারণে মেয়েটির খোঁজ নিতে এসেছিলাম। আমার ভাগনে বা বোন ভগ্নিপতির সাথে আমিও যোগাযোগ করতে পারছিনা। আমি চাই এটার সমাধান হোক।
তবে এ বিষয়ে মাহমুদুল হাসানের পরিবারের কারো সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
বেতাগী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম হাওলাদার বলেন, মেয়েটি যদি লিখিত অভিযোগ করে তবে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।