বরগুনা সদর উপজেলার নলটোনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদ্য বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক ও স্কুলশিক্ষক জাকির হোসেন শাহ আলমের বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলা করেছেন এক নারী।
সোমবার (২৫ এপ্রিল) বরগুনা পৌরশহরের পশ্চিম বরগুনা এলাকার এক নারী বরিশাল সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলাটি দায়ের করেন। মামলা আমলে নিয়ে সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বাদির আইনজীবী অ্যডভোকেট মো. মাসুদ মিয়া মামলা ও আদালতের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলায় সদর উপজেলার নলটোনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদ্য বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক ও বাবুগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মো. জাকির হোসেন শাহ আলম ছাড়াও বরগুনা পৌরশহরের ৪নং ওযার্ডের বাসিন্দা মাহবুবুর রহমানকে আসামী করা হয়েছে।
মামলায় বাদির অভিযোগ, আসামী জাকির হোসেন শাহ আলম তার পূর্ব পরিচিত। সম্প্রতি জাকির ওই নারীকে চাকরি দিয়ে সহায়তার আশ্বাস দেন। এ সুবাদে মোবাইল ফোনে প্রায়ই কথোপকথন হয়। এক পর্যায়ে চাকরি দিয়ে সহায়তার বিনিময়ে মুঠোফোনে আপত্তিকর প্রস্তাব দেন শাহ আলম। এতে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর পরিচয় গোপন করে ভার্চুয়াল যোগাযোগ মাধ্যম ইমোতে পরিচয় গোপন করে ভুয়া একাউন্ট খুলে যোগাযোগ করে এবং আত্মীয়র বাসায় দেখা করার প্রস্তাব দেয়। গত ৮ এপ্রিল রাত ১০টার পরে দেখা করতে তার আত্মীয়র বাসায় গেলে ওই নারী চিনতে পারেন পরিচয় গোপনকারী ব্যক্তিই শাহ আলম জাকির।
এসময় পরিচয় গোপন রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে জাকির হোসেন শাহ আলম তাকে (নারীকে) আত্মীয়র বাসার একটি কক্ষে নিয়ে ধর্ষণচেষ্টা চালায়। এসময় ২নং আসামী মাহবুবুর রহমান আপত্তিকর ছবি তুলতে থাকে। ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে তিনি সে যাত্রায় রক্ষা পেয়ে বাড়িতে চলে আসেন। এ ঘটনার পর আসামী জাকির হোসে শাহ আলম ওই ছবির ভয় দেখিয়ে মুঠোফোন ও ইমোতে কুপ্রস্তাব দেয়। এতে রাজী না হওয়ায় ওই নারীর ছবি সামাজিক আসামীরা যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। এতে তার মান সম্মান ক্ষুন্ন হওয়ার পাশপাশি সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হয়েছেন।
মামলার বাদি বলেন, জাকির হোসেন শাহ আলম এমন দুশ্চরিত্রের স্বভাবের আমার জানা ছিলনা। তিনি আমার দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে পরিচয় গোপন করে আমার সর্বনাশ করতে চেয়েছেন। এতে ব্যর্থ হওয়ায় আমার আপত্তিকর ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে মান সম্মান নষ্ট করেছেন। আমি জাকির হোসেন শাহ আলম ও তার সহযোগী মাহবুবের বিচার চেয়ে মামলা করেছি।
বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহম্মেদ বলেন, মামলার বিষয়টি আমার জানা নেই। ওই নারী আমাদের কাছে কোনো আইনী সহায়তা চাইলে আমরা তাকে সহায়তা করব।
সম্প্রতি বরগুনার নলটোনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক জাকির হোসেন শাহ আলমের এক নারীর সাথে আপত্তিকর অবস্থায় ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় তদন্তের পর গত শনিবার দলীয় পদ থেকে তাকে বহিষ্কার করে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ।