বরগুনা শহরের পৌর সুপার মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রায় দুই শতাধিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পুড়ে নুন্যতম ৫০ থেকে ৭০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং অন্তত পাঁচ শতাধিক ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার (১৭ মে) রাত ১১টার দিকে এঘটনা ঘটে। স্থানীয় লোকজন, পুলিশ, স্কাউট, রেডক্রিসেন্ট, উৎসর্গ, ছাত্রলীগ, ছাত্রদল ও ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রনে তিন ঘন্টাব্যাপী কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
বরগুনা পৌরসভার মেয়র অ্যাড. কামরুল আহসান মহারাজ ও ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক (বরগুনা ও পটুয়াখালী) মো. জাকির হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, রাত ১১টার দিকে কাপড়ের দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তেই তা আশপাশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে প্রথমে ফায়ার সার্ভিসের ২টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। তবে আগুনের তীব্রতা বাড়ায় পরে আরও ৬টি ইউনিট এসে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। ততক্ষণে কমপক্ষে দুই শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়ে গেছে বলে ধারণা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের।
পৌর মার্কেটের ব্যবসায়ী আবদুস মান্নান বলেন, কিছু বুঝে ওঠার আগেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে আশপাশে। আমার ইলেকট্রনিকের দোকানটি পুড়ে একদম ছাই হয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, পৌর সুপার মর্কেটে মোবাইল, ইলেকট্রনিক, জাল, কসমেটিকস, পোশাক, হোটেল, কামারশালা, সেলুন, চায়ের দোকান ও ওষুধের দোকানসহ তিন শতাধিক দোকানসহ বেশ কয়েকটি বসতঘর। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার আগেই অন্তত দুই শতাধিক দোকান পুড়ে গেছে।
এ বিষয়ে বরগুনা পৌরসভার মেয়র অ্যাড. কামরুল আহসান মহারাজ বলেন, ফায়ার সার্ভিসের গাফিলতির কারণে অন্তত তিন শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে অন্তত পাঁচ শতাধিক ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ব্যবসায়ীদের নূন্যতম ৬০ থেকে ৭০ কোটি টাকার ওপরে ক্ষতি হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক (বরগুনা ও পটুয়াখালী) মো. জাকির হোসেন বলেন, খবর পেয়ে বরগুনা, বেতাগী, আমতলী, পাথরঘাটা ও মির্জাগঞ্জের মোট ৮টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন এখন নিয়ন্ত্রণে।
তিনি আরও বলেন, আগুনের উৎস খুঁজে বের করতে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস। এখন পর্যন্ত কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে বরগুনার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহম্মেদ বলেন, পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই এলাকার নিরাপত্তা রক্ষা ও আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসকে সহযোগিতা করেছে। আগুন নেভাতে গিয়ে ১৫-২০ জন ভলেন্টিয়ারসহ স্থানীয় লোকজন আহত হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।