বরগুনায় সদর উপজেলায় এক গৃহবধূর বিরুদ্ধে স্বামী ও সতিনকে ফাঁসাতে নিজের দেড় বছরের কন্যা শিশুকে গলাটিপে হত্যার পর পুকুরে ফেলে দেওয়ার অভিযোগের মামলায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২৩) সকালে বরগুনার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করেন সতিন ফাহমিদা ইসলাম বিথি। ওই আদালতের বিচারক মুহাম্মদ মাহবুব আলম বরগুনা সদর থানার ওসিকে মামলায় তদন্তের নির্দেশ দেন।
মামলার আসামিরা হলেন- বরগুনা পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা নিহত শিশু আদিবা আমীনের মা ইসমত আরা কলি, কলির তিন ভাই জাকির হোসেন, আশ্রাফ, আনোয়ার হোসেন ও বোন জেলি।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ইসমত আরা কলিকে ২০১৩ সালে বিয়ে করেন হাফেজ আল আমীন। তাদের দুই সন্তান শেফা ও আদিবা আমীন। কলির বেপরোয়া চলাফেরার কারণে আল আমীন তাকে গত বছরের ২০ এপ্রিল তালাক দেন।
এরপর ফাহমিদা ইসলাম বিথিকে বিয়ে করে ঢাকায় থাকেন। তালাক দেওয়ায় আল আমীনের বিরুদ্ধে গত বছরের ২৪ মে বরগুনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন কলি। আল আমীন আদালতে হাজির না হলে কলি প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে গত বছরের ৬ অক্টোবর আল আমীনের বড়ভাই বশিরের বাসায় ওই আসামিরা এসে আপসের কথা বলেন। আল আমীন ফোনে জানিয়ে দেন আপস করতে রাজি নন। এতে কলি ও তার ভাইয়েরা ক্ষুব্ধ হয়ে বশিরের ঘর থেকে ওই দিন দুপুরে তার দেড় বছরের কন্যাসন্তান আবিদা আমীনকে নিয়ে রাগে-দুঃখে ও অভিমানে গলাটিপে হত্যা করে আল আমীনের প্রতিবেশী মিরাজের পুকুরে ফেলে দেয়।
পরে কলি বাদী হয়ে আল আমীন, মনির, সেলিনা, ফাহমিদা ইসলাম বিথি ও লন্ডন প্রবাসী জহিরুলের বিরুদ্ধ বরগুনা চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি হত্যা মামলা করেন।
বাদী ফাহমিদা ইসলাম বিথি বলেন, আমি কোনদিন শ্বশুরবাড়ি যাইনি। আমার স্বামী আল আমীন কলিকে তালাক দিয়ে আমাকে বিয়ে করেছেন। আমরা থাকি ঢাকায়।
তিনি আরো বলেন, কলি নিজের সন্তানকে হত্যা করে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়। আমরা সাড়ে তিন মাস জেল খেটেছি। আমার স্বামী আল আমীন এখনো জেলহাজতে।
এ ব্যাপারে ইসমত আরা কলি বলেন, আমি যে আগে মামলা করেছি সেটি সত্য। বিথি যে আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে তা সঠিক নয়।
বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহম্মেদ বলেন, আদালতের আদেশ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেব।