প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার হিসেবে বরগুনায় আশ্রায়ণ প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ে জমিসহ ৪১১টি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি বরগুনা জেলার সদর উপজেলার খেজুরতলা আশ্রয়ণ প্রকল্প হস্তান্তর অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে হস্তান্তর কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রীর আজ ভূমি ও ঘরহীন পরিবারের মধ্যে ৩২ হাজার ৯০৪টি ঘর হস্তান্তর করেন। যার মধ্যে বরগুনা সদরের খাজুরতলা আশ্রায়ণ প্রকল্পে তৃতীয় পর্যায়ে জমিসহ ৪১১টি ঘর হস্তান্তর করেছেন। হস্তান্তর করা ৪১১টি ঘরের মধ্যে আজ ৫০ পরিবারকে জমিসহ ঘর বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।
খাজুরতলা আশ্রয়ণ কেন্দ্রে উপকারভোগী হিসেবে বরাদ্দ পেয়েছেন শিমু, মৌসুমী, রত্না, কাজল, চায়নাসহ ২২জন তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) সদস্য। প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার ঘর পেয়ে নতুন ঠিকানা পেয়েছেন সমাজ বিতাড়িত এই হিজড়া সদস্যরা। পাশাপাশি তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। ফলে সমাজের মূলধারায় আসার সুযোগ পাবেন তারা। এছাড়াও এখানে বরাদ্দ পেয়েছেন ১০জন ভিক্ষুক, ২০জন শারীরিক অক্ষম ব্যক্তি, ২৮জন স্বামী পরিত্যক্তা নারী, ৪১জন হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যসহ অন্যান্য সদস্য।
প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি খেজুরতলা আশ্রয়ণ প্রকল্প হস্তান্তরের শুভ উদ্বোধনকালে কথা বলেন তৃতীয় লিঙ্গের শিমুর সঙ্গে। প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার ঘর পেয়ে এসময় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন শিমু।
প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে শিমু বলেন, ‘গত ২০ বছরে অন্যের কাছে হাত পেতে খেয়েছি, কেউ আমাকে ঘর ভাড়া পর্যন্ত দেয়নি। এখন থেকে আমরা নিজের ঘরে বসে ঈদ করতে পারবো। এর থেকে খুশির আর কিছু হয়না মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।’
জানা গেছে, বরগুনা জেলার ছয় উপজেলায়ই আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। বরগুনায় প্রথম পর্যায়ে ২৩২টি, দ্বিতীয় পর্যায়ে ১৯৩টি, তৃতীয় পর্যায়ে ৭২৫টি ঘরের মধ্যে ৪১১টির নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে এবং মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী ৪১১টি ঘর হস্তান্তর করেছেন। বাকিগুলোর কাজ চলছে।
বরগুনা সদরের খাজুরতলা আশ্রয়ণ কেন্দ্রে মোট জমি রয়েছে ১১.৪০ একর। এরই মধ্যে এখানে নির্মিত হয়েছে ৩২৯টি ঘর। আরও ১৫০টি ঘর নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। যা বাস্তবায়ন হলে এটি হবে দেশের সব চেয়ে বড় আশ্রয়ণ কেন্দ্র।
আরও জানা গেছে, উপকারভোগীরা এখানে দুই শতাংশ জমিসহ অর্ধপাকা দুই কক্ষের ঘর পাচ্ছেন বিনামূল্যে। রয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। এছাড়াও প্রতিটি ঘরে রয়েছে গোসলখানা, টয়লেট ও রান্না ঘর। গৃহসহ জমির দলিল স্বামী-স্ত্রী উভয়ের নামে যৌথভাবে করে দেওয়া হয়েছে। প্রকল্প এলাকায় প্রচুর পরিমাণে গাছ লাগানো হবে। সুপেয় পানির জন্য গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া একটি পুকুরও রয়েছে এ আশ্রয়ন প্রকল্পে শিশু-কিশোরদের শরীর গঠন ও বিনোদনের জন্য প্রকল্প এলাকায় থাকছে খেলার মাঠ। একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ আধুনিক গ্রামের সব সুবিধাই থাকবে খেজুরতলা আশ্রয়ণ প্রকল্পে।