বরগুনায় আওয়ামী লীগের এক নেতাকে নারীর জুতাপেটার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে ওই নেতাকে একটি কক্ষে ৩ জন ব্যক্তি এবং ওই নারীকে অশ্রাব্য কথোপকথন এবং জুতাপেটা করতে দেখা গেছে।
সোমবার (১১ এপ্রিল) প্রথমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের ম্যাসেঞ্জারে এবং পরে তা ফেসবুকে প্রকাশ হয়। মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যাওয়ায় বিষয়টি নিয়ে এখন এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে বরগুনা সদর উপজেলার নলটোনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বাবুগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. শাহ আলম হোসেন জাকিরকে একটি কক্ষে একজন নারীর সাথে একই বিছানায় বসা দেখা যায়।
ওই কক্ষে উপস্থিত আকাশী টি-শার্ট, সবুজ ও সাদা জামা পরিহিত আরও দুজন ব্যক্তিকে আওয়ামী লীগ নেতা শাহ আলম ও নারীর সাথে কথোপকথনরত দেখা যায়।
এসময় ওই নারীকে বলতে শোনা যায়, আমারে বিয়ার কথা কইয়া এইহানে ডাইকা আইনার আকাম করছে।
শাহ আলম বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করলে ওই নারী বলেন, আমার ফোনে রেকর্ড আছে আপনারা শোনতে পারেন।
পরে টাকা পয়সা নিয়ে বিষয়টি গোপন রাখার প্রস্তাব দেন শাহ আলম এবং ৬০ হাজার টাকা দিতে সম্মত হন। কিন্ত ওই নারী প্রস্তাবে রাজী না হয়ে কক্ষে উপস্থিত ব্যক্তিদেরকে বিয়ে পড়িয়ে দিতে বলেন।
ভিডিওর সূত্র ধরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শনিবার রাতে বরগুনা পৌর শহরের ডিকেপি সড়কের একটি বাসায় এ ঘটনা ঘটে।
যোগাযোগ করা হলে নলটোনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম ঘটনার বিষয় স্বীকার করেন।
তিনি বলেন, আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ পরিকল্পিতভাবে আমাকে ওই বাসায় ডেকে নিয়ে নারীকে দিয়ে ফাঁদে ফেলে ভিডিও ধারণ করে। এরপর ব্লাকমেইল করে আমার কাছ থেকে টাকা পয়সা হাতিয়ে নিয়েছে। এখন আবার ওই ভিডিও ছড়িয়ে দিয়ে মানহানি করছে।
ভিডিওতে থাকা ব্যক্তি ও নারীর পরিচয় জানতে চাইলে শাহ আলম স্পষ্ট কোন মন্তব্য করেননি। বলেন, কাউকে চিনিনা।
এদিকে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর থেকে আওয়ামী লীগ নেতা শাহ আলমের পক্ষে-বিপক্ষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিচ্ছেন রাজনীতি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যক্তিসহ নেটিজেনরা।
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. শাহ মোহাম্মদ ওলি উল্লাহ ওলি বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব। যদি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ওই সাধারণ সম্পাদক কোনো অনৈতিক কাজে জড়িয়ে থাকেন সে দায় সংগঠন নেবেনা।
বরগুনা সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহম্মেদ বলেন, এ বিষয়ে এখনো কেউ থানায় কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।