বরগুনার আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের বিতর্কিত সাবেক সেই চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম মৃধার বিরুদ্ধে এবার জোরপূর্বক স্ত্রীর বড় বোনের জমি দখলে রাখার অভিযোগ উঠেছে। এবিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বরিশাল রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি একেএম আহসানউল্লাহর কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী।
এলাকাবাসী ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালে চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম মৃধার শ্বাশুড়ি ফিরোজা বেগম তার পৈতৃক সম্পত্তি থেকে আমতলী পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডে ৩৩ শতাংশ জমি তার ৪ মেয়ের মধ্যে সমান ভাগে ভাগ করে দলিল দেন। ৪ মেয়ের মধ্যে সেজ মেয়ে ও তার স্বামী তাদের অংশে বিল্ডিং নির্মাণ করে বর্তমানে সেখানে ভোগ দখলে আছেন। অন্য ২ মেয়ে তারাও ওই বাড়িতে থাকেন।
তবে ভুক্তভোগীর অংশের ৮ শতাংশ জমির পুরোটাই সাবেক চেয়ারম্যান শহীদ মৃধা নিজ দখলে রেখেছেন। যার মধ্যে ভুক্তভোগীর একটি পুরাতন ঘরও আছে। ওই ঘর ভেঙে নুতন ঘর নির্মাণ করার জন্য গেলে অভিযুক্ত সাবেক চেয়ারম্যান রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তার লোকজন দিয়ে এলাকা থেকে স্ত্রীর বড় বোনকে তাড়িয়ে দেয়।
পরবর্তীতে বরগুনার পুলিশ সুপারের নিকট গেলে তিনি আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট পাঠান। তবে রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে এ বিষয়ে তিনি কোনো সমাধান দিতে পারেননি।
ভুক্তভোগী আমেনা অশ্রু বলেন, ঢাকার জমি আমার মায়ের নামে। ওই জমি তিনি কোন সন্তানকে বন্টন করে দেয় নাই। কিন্তু আমতলীতে পৈত্রিক সম্পত্তি মা আমাদের চার বোনের মধ্যে সমান ভাবে ভাগ করে দলিল দিয়েছেন। আমার সেই ভাগের জমিতে আমার ছোট বোনের স্বামী শহীদ মৃধা জোরপূর্বক দখলে রেখেছেন। জমির পরিচয় এস.এ খতিয়ান-১১ দাগ নং ২৯৫,৩৩০ জমির পরিমান ০৮ শতাংশ।
তিনি আরো বলেন, দখল হওয়া জমি বুঝে পেতে ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন প্রসঙ্গে গত ৩১ মার্চ বরিশাল রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি একেএম আহসানউল্লাহর কাছে বোন শিমুল ইসলাম ও তার স্বামী হলদিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম মৃধার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছি। অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাইনি। উল্টো হুমকি-ধমকির মধ্যে আছি।
এবিষয়ে ভুক্তভোগী আমেনা অশ্রুর মা ফিরোজা বেগম বলেন, আমি আমার মেয়ে জামাই সাবেক চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলামকে একাধিকবার বললেও তিনি আমার কথা শোনেননি। ক্ষমতার দাপটে মেয়ে আমেনা অশ্রুর জমি আত্মসাত করচ্ছে। বিষয়টি স্বজন ও এলাকাবাসীরা জানলেও রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে সকলে নিরুপায়।
এদিকে অভিযুক্ত হলদিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম মৃধার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার স্ত্রীসহ আমেনাদের চার বোনের এক বোন ইতোমধ্যে মারা গেছে। তারপরও ঢাকাতে থাকা জমিজমা ২২ বছরেও বন্টন হয়নি। ওরা ঢাকার জমি আমাকে বুঝিয়ে দিলে আমি এখানকার জমি ফিরিয়ে দেবো।
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম মিজানুর রহমান বলেন, এবিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ পাইনি। পেলে যথাযথ আইনী ব্যবস্থা নেয়া হতো। তারপরও বিষয়টি আমি খোঁজ নিচ্ছি।