বরগুনা সদর উপজেলার এম বালিয়াতলী ইউনিয়নের মাইঠা স্ট্যান্ডে মালিকপক্ষকে হয়রানি করার মানসে ভাড়াটিয়া বাবুল হাওলাদার হামলা ও লুটপাটের নাটক সাজিয়েছে বলে জানা গেছে।
সোমবার গভীর রাতের কোনো এক সময় চায়ের দোকানে ‘হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের’ ঘটনা ঘটে।
বরগুনা জেলা পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, একই ইউনিয়নের লাকুরতলা গ্রামের মৃত আব্দুস সোবহানের পুত্র কামরুল ইসলাম মিরাজ মাইঠা বাসস্ট্যান্ডে নানাবাড়িতে ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্ত জমিতে ভাড়া দেয়ার উদ্দেশ্যে কয়েক বছর আগে একটা ঘর তোলেন। উক্ত ঘরখানা আমতলা গ্রামের বুরজুক আলী হাওলাদারের পুত্র বাবুল হাওলাদার ও মাইঠা গ্রামের মৃত ময়জউদ্দিন মৃধার পুত্র টুকু মৃধা পহেলা আগস্ট ২০২০ তারিখে ভাড়া হিসেবে গ্রহণ করেন। ভাড়ার চুক্তিপত্র শর্ত হিসেবে উল্লেখ ছিল মালিকপক্ষের যেকোনো প্রয়োজনে ভাড়াটিয়া পক্ষ ঘর ছেড়ে দিতে বাধ্য থাকবেন। ঘর ভাড়া নেয়ার পর থেকে অদ্যাবধি কোন প্রকার ভাড়া প্রদান করেনি ভাড়াটিয়া বাবুল হাওলাদার। ভাড়াটিয়া বাবুল হাওলাদার কে দোকান ঘরটি ছাড়িয়া দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানালে তিনি দোকান ঘরটি না ছেড়ে দিয়ে নানা টালবাহানা দিনের পর দিন ঘুরাচ্ছে। এছাড়াও বাবুল হাওলাদার ঘর না ছাড়ার জন্য বিভিন্ন প্রকার পাড়াসহ ঘরের মালিক কামরুল ইসলাম মিরাজ কে ভয় ভীতি এবং হুমকি প্রদান করে আসছে বিষয়টি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মেম্বারসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের নিকট জানালে তারা স্থানীয়ভাবে সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে সমাধান করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।
বাবুল হাওলাদারেরা আট ভাই। এলাকায় তাদের যথেষ্ট প্রভাব প্রতিপত্তি রয়েছে। অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে কামরুল ইসলাম মিরাজের জমি ও ঘর জবর দখল করে রেখেছে বাবুল হাওলাদার। গত ২৭ মার্চ ২০২২ তারিখ বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে বাবুল হাওলাদারের দখলে থাকা দোকান ঘরটি ছেড়ে দেয়ার কথা বলতে গেলে বাবুল হাওলাদার অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ বিভিন্ন ভয়ভীতি এবং খুন-জখমসহ মিথ্যা মামলার হুমকি প্রদান করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার বেশ কয়েকজন লোক জানান, বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কামরুল ইসলাম মিরাজ বর্তমান চেয়ারম্যানের বিপক্ষে ছিলেন। তারই জেরে এলাকার প্রভাবশালী বাবুল হাওলাদারকে ব্যবহার করে প্রতিপক্ষের লোকদেরকে নানানভাবে হয়রানি করা হচ্ছে।
মাইঠা বাস স্ট্যান্ডের আর এক বৃদ্ধ দোকানি ইউনূস মৃধা বলেন, মিরাজ দোকানঘর পাকা করার জন্য সোমবার রাতে ইট এনে দোকানের সামনে রাখলে ওই রাতেই দোকানে হামলা লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি রহস্যজনক।
দোকান ঘরের মালিক মো. কামরুল ইসলাম মিরাজ বলেন, বাবুল হাওলাদাররা আট ভাই। তারা খুবই হিংস্র প্রকৃতির। দীর্ঘদিন ধরে আমার দোকান ভাড়া নিয়েও কোন ভাড়া প্রদান করেনি। আমি দোকান ঘর ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করলেও তাতে তারা কোন প্রকার কর্ণপাত করে না। তারা আমার দোকান ও জমি জবর দখলের পায়তারা চালাচ্ছে। আমি ঘর ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করলে বাবুল হাওলাদার আমাকে খুন করে ফেলবে, আমার নামে মিথ্যা মামলা করবে, আমার হাত-পা কেটে আমাকে পঙ্গু করে দেবে ইত্যাদি ইত্যাদি নানা রকম ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে আসছে।
এব্যাপারে ভাড়াটিয়া দোকানদার বাবুল হাওলাদারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয় সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ নাজমুল ইসলাম নাসিরের সাথে। তিনিও ফোন রিসিভ করেননি।
বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী জানান, এ ব্যাপারে কোনো পক্ষই থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।