প্রেমের টানে জামালপুর থেকে এক তরুনী বরগুনায় এসে বিয়ের দাবিতে ভার্সিটি পড়ুয়া ছাত্রের বাসার সামনে তিনদিন যাবত অনশন করছেন। তবে ওই তরুনি আসার পর বাসা ছেড়ে গা ঢাকা দিয়েছে ভার্সিটির ছাত্র ও তার পরিবার। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে আলোচনা সমালোচনার ঝড়।
শনিবার (৩০ এপ্রিল) তৃতীয় দিনের ন্যায় বরগুনার বেতাগী উপজেলার চান্দখালি বাজার সংলগ্ন কাঠপট্টি এলাকায় ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া এক ছাত্রের বাসার সামনে অনশন করছেন ওই তরুণী।
তরুণী জানান, তার বাড়ি জামালপুরের সরিষাবাড়িতে। তিনি ঢাকার উত্তরায় থাকেন এবং একটি ইউনিভার্সিটিতে আইন বিভাগে অধ্যায়নরত। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজিতে সিভিল প্রকৌশল বিভাগে অধ্যায়নরত মাহমুদুল হাসানের সাথে পরিচয়ের সূত্রে তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক হয়। মাহমুদুল হাসানও রাজধানীর উত্তরায় থেকে পড়াশোনা করত।
তরুণী আরও জানান, প্রেমের সম্পর্ক থেকে তিন বছরের লিভিং রিলেশনের পর সম্প্রতি মাহমুদুলকে বিয়ের কথা বলায় নানা অযুহাতে তরুণীকে এড়িয়ে চলে মাহমুদুল। রোজার শুরুতে মাহমুদুল গ্রামের বাড়ি বরগুনায় চলে আসেন এবং তরুণীর সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।
এরপর বৃহষ্পতিবার সকালে ওই তরুণী লঞ্চে বরগুনায় আসেন। এসেই তিনি চান্দখালি বাজার সংলগ্ন মাহমুদুলের বাসায় আসেন। কিন্ত তিনি আসার পরপরই মাহমুদুল ও তার পরিবার বাসায় তালা দিয়ে গা ঢাকা দেয়। এরপর বাসার সামনে বসে বিয়ের দাবিতে তিনি অনশণ শুরু করেন।
তরুণী বলেন, আমি বাধ্য হয়ে এখানে এসেছি। ও আমায় বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। গত তিন বছর ধরে আমাদের লিভিং রিলেশন। আমি সর্বস্ব খুইয়ে এখন নিরুপায়। বিয়ে করে স্ত্রীর মর্জাদা দিয়ে ঘরে না তুললে আমি এখানেই মরে যাবো।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই তরুণীর নাম মৌ। তিনি ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া নয় এবং তিনি বিবাহিত। তার স্বামীর নাম আমিনুল। তিনি একটি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করতেন। মাহমুদুল হাসানের সাথে তিনি বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে যাওয়ায় স্বামীর সাথে তার বিচ্ছেদ ঘটে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে ওই তরুণী বিষয়টির সত্যতা শিকার করেন। বলেন, আমার ভালো মন্দ সবকিছুই মাহমুদুলের জানা। পালিয়ে না থেকে ও আমার সামনে আসুক, এসে যা বলবে আমি তাই করবো।
তবে এবিষয়ে জানতে একাধিকবার মাহমুদুল হাসানের বাড়িতে গিয়েও কাউকে পাওয়া যায়নি। শনিবার বিকালে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তাদের বাসা তালাবন্ধ দেখা গেছে। মুঠোফোনেও পরিবার ও স্বজনদের কারো সাথেই সংযুক্ত হওয়া যায়নি।
এব্যাপারে বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুহৃদ সালেহিন জানান, তরুণীর নিরাপত্তা ও আইনগত সহায়তার জন্য বেতাগী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে। বিষয়টি সমাধানে উভয়ের পরিবারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করছি।
বেতাগী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম হাওলাদার বলেন, চান্দখালি ফাঁড়ির ইনচার্জকে পাঠিয়ে তরুণীর নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছে। তাকে আইনগত সহায়তা দিয়ে পরিবারের মাধ্যমে আমরা বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি।