যেন সেঞ্চুরির বদলা সেঞ্চুরিতে। আগেই ইনিংসে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসি হাঁকিয়েছিলেন শতক। রান তাড়ায় নেমে যেন দাঁতভাঙা জবাব দিলেন খুলনা টাইগার্সের আন্দ্রে ফ্লেচার। ওপেনিংয়ে নেমে ফ্লেচার হাঁকিয়েছেন সেঞ্চুরি। তার সঙ্গে ছিল শেখ মেহেদি হাসানের ঝড়ো ফিফটি। তাতেই স্রেফ উড়ে গেল কুমিল্লা। আর প্লে অফ নিশ্চিত হলো খুলনার।
শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাউন্ড রবিন লিগের শেষে ম্যাচে প্লেসির সেঞ্চুরিতে ভর করে খুলনাকে ১৮৩ রানের লক্ষ্য দেয় কুমিল্লা। রান তাড়া করতে নেমে মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় মুশফিকের দল। তাদের জয়ে কপাল পুড়ে মিনিস্টার ঢাকার। দলটি ছিটকে গেল টুর্নামেন্ট থেকে। দুর্দান্ত শতকে খুলনাকে প্লে অফে তুলে ম্যাচ সেরার পুরস্কার পান ফ্লেচার।
সবার আগে প্লে অফ নিশ্চিত করেছিল ফরচুন বরিশাল। তাদের পরে কুমিল্লা। দুটি দল মুখোমুখি হবে কোয়ালিফায়ারে। তৃতীয় ও চতুর্থ দল হিসেবে প্লে অফ নিশ্চিত করল চট্টগ্রাম ও খুলনা।
এই ম্যাচের আগেও অনিশ্চয়তায় দুলছিল খুলনার প্লে অফ ভাগ্য। হারলে নিশ্চিত বাদ, জিতলে প্লে অফ; এমন সমীকরণের মুখে খেলেতে নেমে কুমিল্লাকে স্রেফ উড়িয়ে দিয়েছে মুশফিকের দল। লক্ষ্য খুব একটা সহজ ছিল না। তবে তা মামুলি বানিয়ে দেন ফ্লেচার-মেহেদি। দুজনের টর্নেডো ব্যাটিংয়ে ৮ বল হাতে রেখে জয়ের দেখা পায় খুলনা।
শুরুটাও হয়েছিল দারুণ। পাওয়ার প্লে থেকে আসে ৬৮ রান! ফ্লেচার-মেহেদির ওপেনিং জুটি ভাঙে ১৮২ রানে। জয় থেকে তখন খুলনা মাত্র ২ রান দূরে! এটি ওপেনিংয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জুটি। এর আগেরটি ছিল ১৯৭।
ফ্লেচার অপরাজিত ছিলেন ১০১ রানে। মাত্র ৬২ বলে এই রান করেন ফ্লেচার। ইনিংসে সমান ৬টি করে চার-ছয়ের মার ছিল। হাফসেঞ্চুরি করেন মাত্র ২৫ বলেই। আর ৫৯ বলে পেয়েছেন সেঞ্চুরির দেখা। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ঝড় তোলেন মেহেদিও। তিনি ৩১ বলে দেখা পান হাফসেঞ্চুরির। শেষ পর্যন্ত আউট হন ৪৯ বলে ৭৪ রান করে। তার ইনিংসে ৬টি চার ও ৪টি ছয়ের মার ছিল।
এর আগে প্লেসির সেঞ্চুরিতে ভর করে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছিল কুমিল্লা। কুমিল্লার জন্য ম্যাচটি ছিল নিয়ম রক্ষার। আগেই নিশ্চিত হয়ে গেছে কোয়ালিফায়ার। ইমরুল কায়েসের সঙ্গে একাদশে ছিলেন না লিটন দাস-মোস্তাফিজুর রহমানও।
মাহমুদুল হাসান জয় ও পারভেজ হোসেন ইমনের ওপেনিং জুটি ভালো হয়নি। ইমন (৭) আউট হলে ভেঙে যায় জুটি। তিনে নেমে ব্যর্থ ছিলেন মুমিনুল হকও (৭)। এরপর ক্রিজে আসেন প্লেসি। ছিলেন ১৯তম ওভার পর্যন্ত।
মাঝে খেলে গেছেন দুর্দান্ত এক ইনিংস। ৫২ বলে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন প্লেসি। শেষ পর্যন্ত আউট হন ৫৪ বলে ১০১ রান করে। দৃষ্টিনন্দন সব শটে মাতিয়ে রেখেছিলেন শের-ই বাংলা। এক প্রান্ত আগলে রেখেছিলেন তিনি। রানের চাকা রেখেছেন সচল। সেঞ্চুরির মতো খালেদের বলে সিঙ্গেল নিয়ে ৩০ বলে দেখা পেয়েছিলেন হাফসেঞ্চুরির। হাফসেঞ্চুরির পর আরও চওড়া হয় প্লেসির ব্যাট। মাত্র ২২ বলে দেখা পান পরের পঞ্চাশ রানের।
তার ইনিংসে চারের মার ১২টি ও ছয়ের মার ছিল ৩টি। এর মধ্য দিয়ে স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে ৭ হাজার রান করেন দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক এই অধিনায়ক। এর আগে এই আসরেই চট্টগ্রামের বিপক্ষে ৮৩ রান নিয়ে অপরাজিত ছিলেন প্লেসি।
ওপেনার জয়ের ব্যাট থেকে আসে ৩০ রান। শেষ দিকে মাহিদুল অঙ্কন ১১ বলে ২০ রানে অপরাজিত ছিলেন। এ ছাড়া আর কোনো ব্যাটসম্যান দুই অঙ্কের মুখ দেখেননি।
খুলনার হয়ে ১টি করে উইকেট নেন নাভিন উল হক, মেহেদি হাসান ও ফরহাদ রেজা।