ঈদের দিন সকালে মিষ্টিমুখ করে দিনের সূচনা করেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা। আর যুগ যুগ ধরে বাঙালিরা ঈদে ঘরে ঘরে সেমাই দিয়ে মিষ্টিমুখ করেন। তাইতো ঈদুল ফিতরের আগে বাজারে সেমাইয়ের বিক্রির ধুম পড়ে যায়।
বাংলাদেশে মঙ্গলবার ঈদুল ফিতর অনুষ্ঠিত হবে। তাই সময় যত ঘনিয়ে আসছে বরগুনায় সেমাই বিক্রি ততই বেড়ছে। দোকানিরা দম ফেলার সময় পাচ্ছেন না।
সোমবার (২ মে) বরগুনার বিভিন্ন বাজারে মুদি দোকানগুলো ঘুরে দেখা গেছে, হরেক রকম সেমাইয়ের পসরা সাজিয়ে বসে আছেন বিক্রেতারা। রয়েছে ক্রেতাদের ভিড়। কেউ খোলা সেমাই কিনছেন, কেউ প্যাকেট সেমাই। কেউ কিনছেন দামি লাচ্ছা সেমাই, কেউ কিনছেন একদম সাদামাটা খোলা সেমাই।
বিক্রেতারা জানান, ডালডা ভাজা সেমাই কেজি প্রতি ২৫০ টাকা, ঘিয়ে ভাজা সেমাই ২৫০ টাকা, স্পেশাল ঘি সেমাই ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি করছেন তারা। এছাড়া সাধারণ প্যাকেট করা সেমাই ৩৫ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
বিক্রেতারা বলছেন, গত দুই বছর করোনার কারণে ব্যবসা ভালো হয়নি। তাই এবার ভালো বিক্রির আশায় বিভিন্ন নামিদামি কোম্পানির প্যাকেটজাত সেমাইসহ নানারকম খোলা সেমাই দোকানে তোলা হয়েছে। তবে চাহিদার দিক থেকে খোলা সেমাই বেশি বিক্রি হচ্ছে।
বরগুনা বাজারে সেমাই কিনতে আসা আমেনা বলেন, সেমাই ছাড়া ঈদের সকাল কাটে না। এটি একরকম নিয়মের মতো হয়ে গেছে। কিন্তু এবার সব ধরনের সেমাইয়ের দাম একটু বেশিই। শুধু সেমাই নয়, চিনিসহ বিভিন্ন মসলার দামও বাড়তি।
বরগুনা বাজারের সেমাই বিক্রেতা সিদ্দিক বলেন, ঈদের সময় সেমাই বিক্রি বেড়ে যায়। সারা বছর প্যাকেটের সেমাই বিক্রি হয়। প্যাকেট সেমাইয়ের মধ্যে বসুন্ধরার সেমাইয়ের চাহিদা বেশি।
বরগুনা পৌর শহরের বানিয়া পট্টির সেমাই বিক্রেতা মহিবুল্লাহ বলেন, এবার অন্যান্য জিনিসের পাশাপাশি সেমাইয়েরই দামও বেড়েছে। বাজারে চাহিদা অনুযায়ী খোলা সেমাই বেশি বিক্রি হচ্ছে।
বরগুনা জেলা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আলহাজ্ব মো. জাহাঙ্গীর কবীর জানান, করোনার কারণে গত দুই বছর কোন উৎসবেই ব্যবসায়ীরা আশানুরূপ ব্যবসা করতে পারেনি। তবে এবার ঈদে আশানুরূপ বেচাকেনা হয়েছে। এখনও প্রচুর মানুষ বাজারে আসছেন। ক্রেতা-বিক্রেতা সবাই ব্যস্ত। একেবারে চাঁদ রাত পর্যন্ত এ রকম বেচাকেনা চলবে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বরগুনার সহকারী পরিচালক বিপুল বিশ্বাস বলেন, জনস্বার্থে নিয়মিত বাজার তদারকিমূলক অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি থেকে বিরত থাকার জন্য বিক্রেতাদের অনুরোধ করা হয়েছে। কোথাও অযৌক্তিক মূল্য রাখলে সেখানে জরিমানা আরোপ করা হচ্ছে।