বরগুনার তালতলীতে ব্রিজ ভেঙে নিড়া মনি নামের এক কলেজ শিক্ষার্থী গুরুত্বর আহত হয়েছে। এতে ঔ শিক্ষার্থীর মুখের ৪টি দাঁত পড়ে যায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থান কেটে গেছে। চলাচলে বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় নতুন ব্রিজ নিমার্ণের দাবিতে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (১৪ মে) সকালে শিক্ষার্থী নীড়া মনি কলেজে আসার পথে ব্রিজটি ভেঙে পড়ে। এতে ঐ শিক্ষার্থী গুরুত্বর আহত হয়। ঔ শিক্ষার্থী তালতলী সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী। ঘটনার পরপরই নতুন ব্রিজ চেয়ে দুপুরে কলেজের সকল শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,আনুমানিক ২০ থেকে ২৫ বছর আগে জেলা পরিষদ থেকে উপজেলার বড়বগী ও ছোটবগী ইউনিয়নের ছাতনপাড়া ও ঠংপাড়া সংযোগ ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়।নিমার্ণের বছর দশেকের ভিতরেই ব্রিজটি ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। এর পর থেকে আর কোনো সংস্কার হয়নি। এই ব্রিজটি দিয়ে তালতলী সদর বাজার, ঐ এলাকার প্রায় ৪ টি গ্রামের প্রায় ৫ হাজার গ্রামবাসীর চলাচল করে। একই সাথে তালতলী সরকারি কলেজ ও ছাতনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ শতাধিক শিক্ষার্থীদের আসা-যাওয়া করে। ব্রিজটি দীর্ঘদিনেও সংস্কার না করায় লোহার এঙ্গেলগুলো নষ্ট হয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা বিভিন্ন দপ্তরের আবেদন করেও মেলেনি সংস্কার বা নতুন ব্রিজ । বাধ্য হয়ে গ্রাম থেকে টাকা তুলে বার বার সংস্কার করে চলাচল করেন এলাকাবাসী।
এদিকে আজকের সকালে নীড়া মনি নামের এক কলেজ শিক্ষার্থী কলেজের উদ্দেশ্য রহনা হয়। ব্রিজটিতে ওঠার সাথে সাথে ভেঙে খালে পড়ে। এতে ঔ শিক্ষার্থীর মুখের চারটি দাঁত ভেঙে যায়। এছাড়াও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পায়। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে তালতলী হাসপাতালে নেওয়া হয়। ব্রীজ ভেঙে যাওয়ায় জনসাধারণ ও স্কুলশিক্ষর্থীদের চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে ৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। ব্যাহত হচ্ছে তাদের লেখাপড়া। পরে নতুন ব্রিজ নির্মাণের দাবিতে সরকারী কলেজের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেন।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন,এই ঝুকিপূর্ণ ব্রিজটি দিয়ে আমরা প্রতিনিয়তই কলেজে আসতে হয়। আজকের আমাদের এক সহপাঠী এই ব্রিজটি ভেঙে পড়ে গুরুতর আহত হয়েছে। আমাদের একটাই দাবি এই ব্রিজটি নতুনভাবে নির্মিত হোক। আমরা কলেজে শিক্ষার্থী ছাড়াও সাধারণ মানুষের যাতায়াতের জন্য এই ব্রিজটিই একমাত্র মাধ্যম।
স্থানীয় মালেক বলেন, নাসির উদ্দীন বলেন সেতুটি ভেঙ্গে পড়ায় দুই পাড়ের ছেলে মেয়ে বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া করতে পারছে না। এতে তাদের লেখা পড়ার মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। দ্রুত সেতু নির্মাণের দাবি করেন। এছাড়াও সেতুটি ভেঙ্গে পড়ায় দুই গ্রামের মধ্যে চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে আমাদের জরুরী প্রয়োজনের কোন কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে।
তালতলী কলেজে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুর রহমান বলেন আজ সকালে কলেজের শিক্ষার্থী সহ ব্রিজটি ভেঙে পড়ে। ঔ শিক্ষার্থীকে চিকিৎসায় পাঠিয়ে আমরা তাত্ক্ষণিক মানববন্ধন করি। এখানে দ্রুত নতুন একটি ব্রিজ না দিলে কলেজের অনেক শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাবে। তিনি আরও বলেন এই ব্রিজটির বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে আবেদন করেও কোনো সমাধান মেলেনি।
উপজেলা প্রকৌশলী আহম্মদ আলী বলেন, এই ব্রিজটি অনেক আগে নির্মাণ করা হয়েছে। এটার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এই ব্রিজটির বিষয়ে মাসিক মিটিং উত্থাপন করেছেন। নতুন একটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য উর্ধতন কর্মকর্তাদের জানানো হবে। তিনি আরও বলেন বিকল্প ভাবে চলাচলের জন্য ইউএনও এবং উপজেলা চেয়ারম্যানের সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।