সুন্দরবনে দেশের একমাত্র বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র করমজলে একটি বাটাগুর বাসকা কচ্ছপ ৩৪টি ডিম পেড়েছে। শনিবার (৫ মার্চ) রাতে প্রজনন প্রকল্পের পুকুর পাড়ের বালুর মধ্যে এ ডিম দেয় কচ্ছপটি।
করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আজাদ কবির জানান, কচ্ছপের ডিম দেওয়ার পরিবেশ উপযোগী করে আগে থেকেই প্রকল্পের পুকুর পাড়ে বালুর চর তৈরি করে রাখা হয়েছিল। সেখানে শনিবার রাতে ডিম দেয় প্রকল্পের একটি কচ্ছপ। এরপর রবিবার সকালে বালুচর থেকে ডিমগুলো তুলে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা হয়েছে। বালুচর থেকে তুলে বাচ্চা ফুটানোর জন্য আবারো বালুর ইনকিউভেশনে রাখা হয়েছে ডিমগুলো।
২৭-২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ৬০-৬৫ দিনের মধ্যে এ ডিম থেকে বাচ্চা ফুটে বের হবে। গত বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে এ প্রকল্পের চারটি কচ্ছপ ৯৬টি ডিম দেয়। তারমধ্যে ৭৯টি বাচ্চা ফুটে। আর ২০২০ সালে দুটি কচ্ছপের দেওয়া ৫৬টি ডিমে বাচ্চা হয় ৫২টি। যার গড় বাচ্চা ফুটার হার ৯০ ভাগ ও তার চেয়েও বেশি। এবারও অন্তত ৯০ ভাগের মতোই ডিমের বাচ্চা পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী বনবিভাগ।
এ ছাড়া আরও একটি কচ্ছপ দুয়েক দিনের মধ্যে ডিম দেবে জানান বন কর্মকর্তা মো. আজাদ কবির।
করমজল কচ্ছপ প্রজেক্টের স্টেশন ব্যবস্থাপক আ. রব জানান, ২০১৪ সালে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের (মোংলা) করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে গড়ে তোলা হয় দেশের বিলুপ্ত প্রায় বাটাগুর বাসকা কচ্ছপের প্রজনন প্রকল্প। শুরুতেই চারটি পুরুষ ও চারটি নারী কচ্ছপ দিয়েই এ প্রজনন কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১৭ সাল থেকে এ প্রকল্পে কচ্ছপ ডিম দিতে শুরু করে। বর্তমানে এ প্রজেক্টে ছোট-বড় মিলিয়ে ৪৩৬টি কচ্ছপ রয়েছে।
মূলত বিলুপ্ত প্রায় বাটাগুর বাসকা প্রজাতির কচ্ছপের বংশবিস্তার, প্রজনন, খাদ্যাভাস, আচরণ ও বিচরণক্ষেত্রসহ নানা বিষয়ে জানতে গবেষণার জন্যই এ প্রকল্প চালু করে বনবিভাগ।
বনবিভাগের এ প্রকল্পের সঙ্গে রয়েছে অস্ট্রিয়ার জুভিয়েনা, আমেরিকার টিএসএ ও ঢাকার প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন।
তবে এ প্রকল্পটি সফলতার দিকেই অগ্রসর হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কচ্ছপ প্রকল্পের স্টেশন ব্যবস্থাপক আ. রব।