ঘুষ বানিজ্য ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে বরগুনার বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আমানুল্লাহ আল-মামুনের অপসারন দাবিতে স্বাস্থ্য বিভাগের মাঠ কর্মীদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি প্রত্যাহার করা হয়েছে। বরিশাল বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. মো. হুমায়ুন শাহীন খানের সঙ্গে কর্মচারীদের কয়েক দফা বৈঠকের পর দাবি পূরণের আশ্বাসে গত মঙ্গলবার রাতে তাঁরা এ সিদ্ধান্ত জানান।
বেতাগী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একাধিক মাঠ কর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আমানুল্লাহ আল-মামুন প্রায়ই বিনা কারণে কর্মচারীদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। তিনি বিভিন্ন বরাদ্দের নামে ভূয়াবিল উত্তোলনের পাশাপাশি কর্মীদের সম্মানি ভাতা থেকে টাকা কর্তনসহ নানা তাদের নানাভাবে হয়রানির করে আসছেন। স্বাস্থ্য কর্মকর্তার এসব কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ হয়ে উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ২২ জন স্বাস্থ্য সহকারী ও ১৫ জন সিএইচসিপি গত সোমবার (১৬ মে) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহা-পরিচালক বরাবর তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ প্রদান করেন।
কিন্তু অভিযোগের পরও কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা না নিলে মঙ্গলবার (২৪ মে) সকাল থেকে স্বাস্থ্য বিভাগের মাঠ কর্মীরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে কর্মবিরতি শুরু করেন। এতে কমিঊনিটি ক্লিনিকগুলোতে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। এতে দূর্ভোগে পড়েন এই অ লের রোগীরা।
বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য সহকারী এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. গোলাম কিবরিয়া বলেন, বেতাগী স্বাস্থ্য কর্মকর্তার ঘুষ বানিজ্য ও দুর্নীতিসহ অশালীন ব্যবহারে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে গিয়েছি। তিনি ঘুষ ছাড়া কোন ফাইলে সই করেন না। আমাদের সম্মানি ভাতা থেকে তাকে কমিশন দিতে হয়। এসবের প্রতিবাদ করলে তিনি আমাদের চাকরিচ্যুত করার হুমকি দেন। তাই বাধ্য হয়ে আমরা তার বদলির দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করি।
তিনি আরও বলেন, ডিডি মহোদয় নিজে এসে আমাদের ভোগান্তির কথা শুনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তার আশ্বাসে আমরা কর্মবিরতি স্থগিত রেখেছি। তবে আগামী শনিবারের মধ্যে দৃশ্যমান কোন ব্যবস্থা না নিলে আমরা রবিবার থেকে আবার কর্মবিরতি শুরু করবো।
জানতে চাইলে বরিশাল বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. মো. হুমায়ুন শাহীন খান বলেন, বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে মাঠপর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মীরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেন। স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সাথে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমন্বয় ও সুসম্পর্কের অভাবের কারণেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। তবে অভিযোগ প্রমানিত হলে নিশ্চয়ই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।