ঢাকাবুধবার, ৭ই জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, রাত ৯:২০
আজকের সর্বশেষ সবখবর

‘জাতীয় পতাকা’ স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের জাতিস্মরের প্রতীক

ফাইজুল ইসলাম
মার্চ ২, ২০২২ ৭:৩১ অপরাহ্ণ
পঠিত: 162 বার
Link Copied!

জাতীয় পতাকা নিছক কোন পতাকা নয়, এটি পতাকার প্রতিকৃতিতে ফুটে থাকা রাষ্ট্রসত্তা। বাঙালী জাতির সার্বভৌমত্বের প্রতীক জাতীয় পতাকা। বাঙালী জাতির মুক্তি বা স্বাধীন স্বাধিকারের প্রতীক লাল সবুজ পতাকা।

বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা সিরাজুল আলম খানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুমোদিত হয়। ১৯৭০ সালের ৬ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের (ইকবাল হল) ১১৮ নম্বর কক্ষে তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা আ স ম আব্দুর রব, শাজাহান সিরাজ, কাজী আরেফ আহমদ, মার্শাল মনিরুল ইসলাম, হাসানুল হক ইনু ও শিবনারায়ণ দাস পতাকা নকশা তৈরি করার পরিকল্পনা নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন। বৈঠকে কাজী আরেফের প্রাথমিক প্রস্তাবনার ওপর ভিত্তি করে আলোচনা শেষে গাঢ় সবুজ জমিনের ওপর লাল সূর্যের মাঝে হলুদ রঙের বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত পতাকা তৈরির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

এরপর ঢাকা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা হলে হাসানুল হক ইনুর নেটৃত্বে ১১৬ নম্বর কক্ষে রাত ১১টার পর বাংলাদেশের পতাকার পরিকল্পনা ও সিদ্ধান্ত মোতাবেক লাল-সবুজের বৃত্তের ওপর পূর্ব বাংলার চিত্র আঁকেন ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ চিত্রকর্ম শিল্পী শিবনারায়ণ দাস।

পুরো পতাকার ডিজাইন সম্পন্ন করার পর সেই রাতেই ঢাকার নিউ মার্কেট এলাকার বলাকা ভবনের তৃতীয় তলায় ছাত্রলীগের অফিসের পাশে ‘নিউ পাক ফ্যাশন’ টেইলার্সের দর্জি খালেক মোহাম্মদি পতাকার নকশা বুঝে নিয়ে কাজ শুরু করেন এবং ভোরের মধ্যেই কয়েকটি পতাকা তৈরি করেন।

২ মার্চ ঢাকায় স্বতঃস্ফূর্ত হরতাল পালিত হয় এবং পাকিস্তানি সরকার কারফিউ জারি করে। ঐ দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় বেলা ১১টায় ছাত্রলীগ ও ডাকসুর আহ্বানে আয়োজিত সভায় লাখ লাখ ছাত্র-জনতার উপস্হিতিতে বাংলাদেশের মানচিত্রখচিত প্রথম স্বাধীনতার পতাকা প্রথম উত্তোলন করা হয়।

“পতাকা উত্তোলনের সময় বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো”

“তোমার নেতা আমার নেতা শেখ মুজিব শেখ মুজিব, পদ্মা মেঘনা যমুনা তোমার আমার ঠিকানা”

স্লোগানে স্লোগানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা প্রকম্পিত হয়। এ বিশাল সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন নূরে আলম সিদ্দিকী।

তৎকালীন ডাকসুর ভিপি আ স ম আব্দুর রব স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করে, বাঙালির স্বাধীন আবাস ভূমি বাংলাদেশ নামক নতুন রাষ্ট্রের অভু্যদয় অনিবার্য করে তোলেন। দীর্ঘ নয় মাসের সম্মুখ সমর ও এক সগর রক্তের বিনিময়ে কেনা আমাদের জাতীয় পতাকা।

জাতীয় পতাকা উত্তোলনের সময়

ঈদ-এ-মিলাদুন্নবী, স্বাধীনতা দিবস (২৬ মার্চ), বিজয় দিবস (১৬ ডিসেম্বর) এবং সরকার ঘোষিত অন্য যেকোনও দিন সারা দেশের সরকারি-বেসরকারি সব ধরনের অফিসে জাতীয় পতাকা ওড়ানোর নির্দেশনা আছে।

ভাষা শহীদ দিবস (২১ ফেব্রুয়ারি), জাতীয় শোক দিবস (১৫ আগস্ট) এবং সরকার নির্দেশিত দিনগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখতে হবে। তবে অর্ধনমিত করার ক্ষেত্রে আগে পূর্ণ উত্তোলন করে তারপর অর্ধনমিত করার নিয়ম।

এ দিবসে যা খেয়াল রাখতে হবে

বিশেষ কয়েকটি ক্ষেত্রে খেয়াল রাখার জন্য আইনে বলা আছে, কবরস্থানে ‘জাতীয় পতাকা’ নিচু করা যাবে না, বা ভূমি স্পর্শ করানো যাবে না। ‘পতাকা’ কোনও ব্যক্তি বা জড়বস্তুর দিকে নিম্নমুখী করা যাবে না; কখনোই তার নিচের কোনও বস্তু; যেমন- মেঝে, পানি বা পণ্যদ্রব্য স্পর্শ করবে না; কখনোই আনুভূমিকভাবে বা সমতলে বহন করা যাবে না। সর্বদাই ঊর্ধ্বে এবং মুক্তভাবে থাকবে।

জাতীয় পতাকা আইন অমান্যকারীর শাস্তি

পতাকা আইন অমান্যকারীদের জন্যে এক বছরের কারাদণ্ড বা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় শাস্তি দেওয়া যাবে।

তথ্যসূত্র:
১.হাসান হাফিজুর রহমান
২.স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস
৩.একদিন এই দেশে যুদ্ধ হয়েছিল
৪.মহিউদ্দিন আহমেদ

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।