আমতলীতে ভোগদখলীয় জমি চাষাবাদে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম আঃ লতিফ বিশ্বাসের দুই কন্যা কানিজ ফাতেমা শিল্পী ও খাদিজা বেগম বেবি।
শনিবার (১৮ ফেব্রয়ারী) সকাল ১১টায় আমতলী রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে লিখিত বক্তব্যে কানিজ ফাতেমা শিল্পী জানায়, মোকাম পটুয়াখালী ২য় সাব জজ আদালতের দেওয়ানী ৬০/৮২ মোকদ্দমার ডিগ্রীর অনুবলে ৬০ নং দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া মৌজায় ১১.৮৭ একর এবং একই আদালতের দেওয়ানী ১৪৯/৮২ মোকদ্দমার ডিগ্রীর অনুবলে একই মৌজায় ১২.২৩ শতাংশ জমির মালিক।
আমার বড় বোন সদ্য মারা যাওয়া মাহমুদা সুলতানা লিলি একই আদালতের দেওয়ানী ৪/৭৫ নং মোকদ্দমার ডিগ্রী ৬০নং দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া মৌজায় ৯.৯ একর সম্পত্তির মালিক। আমার মেঝ বোন খাদিজা বেগম বেবি একই আদালতের দেওয়ানী দেওয়ানী ২২০/৮২ নং মোকদ্দমার ডিগ্রী অনুবলে একই মৌজায় ১০ একর সম্পতির মালিক। উল্লেখিত জমি আমাদের নামে নাম জারি করিয়া সরকারের নির্ধারিত খাজনাদি পরিশোধ করিয়া ভোগ দখল করিতেছি।
আমার মামা মরহুম ওয়াদুদ মল্লিক জীবিত থাকা কালীন ওই জমি সেই দেখাশুনা করতো এবং প্রতিবছর জমি থেকে প্রাপ্ত আয় (টাকা) আমাদেরকে দিতেন। ২০০৮ সালে তিনি মারা যাওয়ার পরে ২০০৯ সাল থেকে আমার বড় ভাই মোঃ জাকির হোসেন বিশ্বাস ওই জমি ভোগ দখল করতে থাকে। কিন্তু আমার বড় মামা মরহুম আঃ সত্তার মল্লিকের পুত্র ডেনি মল্লিক তার মামা আবুল হোসেন বিশ্বাসের মদদে আমাদের ভাইদের বিরুদ্ধে ৬ থেকে ৭টি মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের হয়রানি করতে থাকে এবং জমি ভোগ দখলে বাঁধা সৃষ্টি করে। অতঃপর ২০১৬ সালে আমরা তিন বোন আমিন (সারর্ভেয়ার) নিয়ে সিমানা পিলার দিয়ে আমাদের অংশের জমি বুঝে নিয়ে ভোগ দখল করতে থাকি।
তিনি লিখিত বক্তব্যে আরো জানায়, সদ্য সমাপ্ত ইউপি নির্বাচনে আমরা ও আমাদের পরিবার নৌকা মার্কার প্রার্থীর সমর্থণ করি। ওই নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়াম্যান প্রার্থী হিসেবে আসাদুজ্জামান মিন্টু মল্লিক চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পরে তারই সহযোগিতায় ডেনি মল্লিক আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে। গত ১৬ ফেব্রয়ারি বিকেলে আমাদের ওই ভোগদখলীয় জমিতে ডাল ফলানোর জন্য চাষাবাদ করতে গেলে আসাদুজ্জামান মিন্টু মল্লিকের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ডেনি মল্লিক, জুয়েল মল্লিক, সোহেল মল্লিক ও ইলিয়াস মৃধাসহ আরো ২০/২৫ জন সন্ত্রাসী লেলিয়ে দিয়ে আমার ট্রাকটর (লাঙ্গল) চালক জাকির শিকদার ধরে এনে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে বেদরক মারধর করে গুরুত্বর আহত করেন। বর্তমানে সে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে।
আমরা তিন বোন ডেনি মল্লিকের হয়রানি থেকে পরিত্রান পেতে একাধিকবার থানায় অভিযোগ দিয়েছি এবং থানা থেকে আমাদের কাগজপত্র পর্যালোচনা করে যে সিন্ধান্ত দিয়েছে আমরা তা মেনে নিলেও ডেনি মল্লিক তা মানছেন না। তাই বাধ্যহয়ে আমাদের ভোগ দখলীয় জমি ফিরে পেতে ও চাষাবাদ করতে আপনাদের (সাংবাদিকদের) শরনাপন্ন হয়েছি।
কানিজ ফাতেমা শিল্পী বলেন, তাদের তিন বোনের ভোগ দখলীয় জমিতে নির্বিঘে চাষাবাধ করতে পারা এবং চেয়ারম্যান মিন্টু মল্লিক, ডেনি মল্লিকসহ তাদের সন্ত্রাসীদের অত্যাচার ও নিপিড়ন থেকে মুক্ত থাকার জন্য মানণীয় প্রধান মন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র ও ভূমি মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ডেনি মল্লিক মুঠোফোনে বলেন, ওই জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান। ওই জমি আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকেই চাষাবাদ করা হয়। আর আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা আদৌ সত্যি নয়। আমি ও আমার সাথে যাদেরকে জড়িয়ে ট্রাকটর (লাঙ্গল) চালককে মারধর করার কথা বলা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিন্টু মল্লিক বলেন, উভয়ই পরিবারই আমার আত্মীয়। পারিবারিকভাবে জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে উভয় পরিবারের মধ্যে মতবিরোধ চলে আসছে। এখানে আমাকে জড়িয়ে যে বক্তব্য দেয়া হয়েছে তা আদৌ সঠিক নয়।
সংবাদ সম্মেলনে কানিজ ফাতেমা শিল্পী ও খাদিজা বেগম বেবির সাথে ভাই মোঃ ফিরোজ বিশ্বাসও উপস্থিত ছিলেন।