এক মাস সিয়াম সাধনার পর এলো খুশির ঈদ। করোনা মহামারির কারণে দুই বছর অনেকটা নির্বাসনে ছিল মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব ‘ঈদুল ফিতর’।
করোনার কালো অধ্যায়কে পিছনে ঠেলে এবার সেই উৎসব আবারও স্বরূপে ফিরে এসেছে। ফিরে এসেছে সব মানুষের খুশির ঈদ। আবারও সবাই প্রাণ ভরে, মন খুলে আনন্দ উৎসবে মেতে উঠবেন।
ঈদ সাম্যের বার্তা বয়ে নিয়ে আসে। ঈদ খুশির বার্তা বয়ে নিয়ে আসে। সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে আজ প্রত্যেক মানুষ এক কাতারে শামিল হবেন ঈদের জামাতে। ধনী-গরিব, ছোট-বড় ভেদাভেদ থাকবে না। থাকবে না হিংসা বিদ্বেষ। হানাহানি থাকবে না।
জাতীয় ঈদগাহ থেকে শুরু করে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম, রাজধানীর পাড়া মহল্লার মসজিদ, কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান থেকে শুরু করে দেশের সর্বত্র বেশির ভাগ ক্ষেত্রে খোলা ময়দানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
গত দুই বছর ঈদের এসব জামাত হয়নি বৈশ্বিক মহামারির দাপুটে। ঘরবন্দি মানুষ ঘরেই আদায় করেছেন নামাজ।
ঈদের জামাত শেষে সবাই একে অন্যের সঙ্গে মিলিত হবেন প্রাণ খুলে। কোলাকুলি করবেন একে অন্যের সঙ্গে। হাত ধরাধরি করে পথ চলবেন বাবা-ছেলে। বন্ধু-বান্ধবরা মেতে উঠবেন তুমুল আড্ডায়।
বৈশ্বিক মহামারি করোনা সব কিছুকেই দূরে ঠেলে দিয়েছিল গত দুই বছর। মানুষের মধ্যে তৈরি করেছিল দূরত্ব। মাস্কের আড়ালে মূলত মুখোশ পরেই গত দুই বছর কাটিয়েছেন দেশবাসী। সেই মুখোশে ঢাকা পড়েছিল আমাদের অনেকের পরিচয়।
এবার ঈদ সেই কৃত্রিম মুখোশকে বিদায় দিয়ে দূরত্ব ঘুচাবে-এমন বার্তায় পাওয়া যাচ্ছে গত কিছু দিন ধরে। প্রত্যাশিত আনন্দ উৎসব হবে ঘরে ঘরে, গ্রামে গ্রামে, পাড়া-মহল্লায়। শহরের পাড়া-মহল্লার মোড়ে মোড়ে দেখা যাবে তরুণ যুবকদের প্রাণখোলা আড্ডা, আনন্দ-উচ্ছাস। বুকভরে শ্বাস নিয়ে ঘুরে বেড়াবেন সবাই। মহামারির কারণে যা দুই বছর আড়ালেই চলে গিয়েছিল।
এই ঈদ তাদের জন্য কষ্টের, দুঃখের। যারা বৈশ্বিক মহামারির শিকার হয়ে পরিবারের সদস্যকে হারিয়েছেন। স্বজনকে হারিয়েছেন। আমরা প্রত্যাশা করি, মহামারির শিকার ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো শোক কাটিয়ে উঠবে। স্বজন হারানো পরিবারগুলোর প্রতি সমবেদনা।
ঈদের এই দিনে প্রত্যাশা আর যেন এমন কালো মেঘ, এমন মহামারি, না আসে। আর যেন মানুষকে ঘরবন্দি হতে না হয়। উৎসব, আনন্দে যেন কোনো ছাপ না পড়ে।