বরগুনা সহ উপকূলীয় জেলার খাকদন, বিষখালী, বুড়ীশ্বর, বলেশ্বর নদী আর সংযোগ খালে প্রতিদিন ফেলা হচ্ছে টন টন অপচনশীল বর্জ্যো পদার্থ। পরিবার,মিল, কারখানা, ব্যাবসা প্রতিষ্টান এবং স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রের অপচনশীল, ইনজেকশন সূইচ,সিরিঞ্জ, প্লাষ্টিক স্যালাইন প্যাকেট,ঔষধের প্লাষ্টিক খোসা ইত্যাদি ছাড়াও ব্যবহ্রত প্লাষ্টিকের পানির বোতল,পলিথিন, চিপস,বিস্কুট, চানাচুরের প্যাকেট, ককসিট ফেলে পানিকে দূষিত করা হচ্ছে। বরগুনার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত খাকদন নদী এই অপচনশীল দ্রবের কারনে পানির নিম্নস্তর ভরাট হয়ে স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত হচ্ছে।খাকদন নদীর দুপাড় একদিকে অবৈধ দখলদারদের দখলে চলে গিয়ে যেমন সংকুচিত হয়েছে, তেমনি এই সকল অপচনশীল বর্জ্যের স্তুপে নদীর তলদেশ ভরে যাচ্ছে। একই অবস্থা খাকদন নদীর সংযোগ ভাড়ানী খালে।বরগুনার বিষখালী, বুড়ীশ্বর আর বলেশ্বর নদীতে প্রতিদিন ভেসে আসছে টনে টন বর্জ্যে। ৪টি নদীর প্রবাহমান সংযোগ খালগুলোর তলদেশ অপচনশীল বর্জ্যে স্তুপ হয়ে আছে। বিভিন্ন পশু- পাখির মরদেহও আটকে আছে বর্জ্যের সাথে।
বরগুনার উপকূলীয় উপজেলা তালতলীর জোয়ালভাঙ্গা গ্রামে চায়না প্রতিষ্টানের নির্মাণাধীন আইসোটেক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সকল অপচনশীল বর্জ্যে ফেলা হচ্ছে বুড়ীশ্বর নদী আর এর সংযোগ খালে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা নির্মাণাধীন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বাহিরে রাস্তার পাশে যত্রতত্র, ব্যাক্তি মালিকানাধীন জমি ও পুকুরে হাজার হাজার টন বর্জ্যে ফেলে পরিবেশকে বিপর্যস্ত করে ফেলা হয়েছে। খাল আর পুকুরের পানি বিষাক্ত হয়ে মরে যাচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ও জলজপ্রাণী।
তালতলী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রেজবি- উল কবির বলেন, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যাবহ্রত অপচনশীল বর্জ্যে এলাকার বিভিন্ন ব্যাক্তির জমি ও পুকুরে ফেলে ইতোমধ্যে পরিবেশ নষ্ট করা হয়েছে। গ্রামবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাদেরকে নোটিশ দিয়েছি।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ কাওসার হোসেন বলেন, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কার্যক্ষম এখনো শুরু হয়নি,শুরু হলে বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তির মাধ্যমে বর্জ্যে ব্যাবস্হা নিয়ন্রন করা হবে। তবে এখন যে ভাবে তাদের ব্যাবহ্রত প্রতিদিনের বর্জ্যে ফেলে পরিবেশ দূষন করা হচ্ছে, আমরা এব্যাপারে তাদেরকে সতর্ক করে দেব।
পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) বরগুনার সমন্ময়কারী মিজানুর রহমান বলেন, যে ভাবে উপকূলের নদী আর খালগুলোতে বর্জ্যে ফেলে পরিবেশকে দূষিত করা হচ্ছে ভবিষ্যৎ এর জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।বিভিন্ন সময় নাগরিকরা বরগুনার খাকদন নদী আর ভাড়ানীখাল সহ নদী-খাল দখল আর দূষনের হাত থেকে রক্ষার দাবীতে আন্দোলন করে আসছে।
গণমাধ্যম ও বরগুনা নাগরিক অধিকার সংরক্ষন কমিটির সাধারন সম্পাদক মনির কামাল বলেন,বরগুনা দেশের পর্যটন জেলা। নদী- সাগর আর সবুজ বণের দৃষ্টি নন্দন দৃশ্য দেখতে হাজার হাজার পর্যটক শীত মৌসুমে আসছেন। কিন্তু দুঃখজনক নদী -খাল বর্জ্যে দিয়ে ভড়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরী করা হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তর বা স্হানীয় প্রশাসন বিষয়টি গুরুত্ব দিচ্ছে না।