ইউক্রেনে অলভিয়া বন্দরে আটকে পড়া বাংলাদেশি জাহাজে থাকা ২৮জন নাবিক ও ইঞ্জিনিয়ারকে উদ্ধার করে নিরাপদ জায়গায় বাঙ্কারে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
জাহাজটিতে বুধবার রকেট হামলায় নিহত ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানের মৃতদেহ নিরাপদ জায়গায় নিয়ে হিমাগারে রাখা হয়েছে।
এই খবর নিশ্চিত করে পোল্যান্ড থেকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সুলতানা লায়লা হোসেন জানিয়েছেন, বন্দরটির আশেপাশের এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বসবাসকারী বাংলাদেশের নাগরিকদের সহায়তায় জাহাজ থেকে নাবিকদের দ্রুত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
গত বুধবার ঐ জাহাজে রকেট হামলায় একজন নিহত হওয়ায় ঘটনায় বেঁচে থাকা নাবিকদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল।
এর আগে থেকেই ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে বাংলাদেশি জাহাজে রকেট হামলার ঘটনায় দু’জন নারী ক্যাডেটসহ যে ২৮ জন নাবিক এবং ইঞ্জিনিয়ার বেঁচে গেছেন, সেই ঘটনার পর থেকেই তারা বাঁচার আকুতি জানিয়ে তাদের স্বজনদের কাছে বার্তা পাঠিয়ে আসছিলেন।
তাদের কয়েকজন সামাজিক মাধ্যমেও বাঁচার আকুতি জানিয়ে ভিডিও পোস্ট করেছিলেন।
তাদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ইউক্রেন এবং রাশিয়ার সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে কূটনৈতিক তৎপরতা চালানোর কথা বলা হচ্ছিল।
কিন্তু তাতে কোন পক্ষ থেকেই নিশ্চয়তা পাওয়া যাচ্ছিল না।
পোল্যান্ড থেকে রাষ্ট্রদূত সুলতানা লায়লা হোসেন বলেন, “আমরা এখানে ইউক্রেন সরকারের সাথে যোগাযোগ করেছিলাম। কিন্তু যুদ্ধের ভেতরে আমাদের তারা কিছু বলেনি।”
শেষপর্যন্ত স্থানীয় বাংলাদেশিদের তৎপরতায় জাহাজের নাবিক এবং ইঞ্জিনিয়ারদের উদ্ধার করে বন্দরটি থেকে দুই কিলোমিটার দূরে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ একটি জায়গায় নেয়া গেছে।
রাষ্ট্রদূত বলছিলেন, “অনেক বাংলাদেশি দীর্ঘদিন ধরে সেখানে আছেন। ওনারা বন্দরের আশে পাশেই থাকেন। বন্দরের সাথে তাদের সম্পর্ক ভাল। সেই সম্পর্ক এবং ওনাদের ব্যক্তিগত তৎপরতায় আমরা নাবিকদের জাহাজ থেকে বের করে একটা সেল্টার হাউজে নিয়েছি,” বলেন তিনি।
তিনি জানান, শেল্টারে হাউজেই ওই নাবিক এবং ইঞ্জিনিয়াররা রয়েছেন এবং সেখানে ডেড-বডিও নেয়া হয়েছে। ডেড-বডি একটি হিমাগারে রাখা হয়েছে।
রাষ্ট্রদূত সুলতানা লায়লা হোসেন বলেছেন, জীবিত ২৮ জনকে এবং নিহতের মৃতদেহ নিয়ে পুরো দলটিকে ইউক্রেনের সীমান্ত দিয়ে পোল্যান্ডের রাজধানীতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা তারা অব্যাহত রেখেছেন।
“এখন ইউক্রেনের ভিতরেই আমরা নিরাপদ জায়গা যতটুকু মনে করেছি সেখানে নিয়েছি। সেখানে বাংকার আছে। ওনারা প্রয়োজনে বাঙ্কারে থাকতে পারবেন। এখন ডেড-বডিসহ ওনাদের পোল্যান্ড সীমান্ত দিয়ে ওয়ারশতে এনে আমরা যাতে বাংলাদেশে পাঠাতে পারি সেই চেষ্টা আমাদের আছে।”
ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে ঐ জাহাজে রকেট হামলায় ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান নিহত হন। বিবিসি